গৌরবগাঁথা একটি উপজেলার নাম মিরপুর
বিশেষ প্রতিবেদকঃ
মিরপুর। কুষ্টিয়ার মিরপুর। শুধূ একটি উপজেলার নামই নয় একটি গৌরব গাঁথা মাটির নাম। লড়াই, সংগ্রাম, ভালোবাসা, সম্প্রীতির এক আবাদভূমি আমাদের গর্বের এই মিরপুর। এই মিরপুর স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি উপজেলা। এখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পূর্ণ স্বাবলম্বি । এখানকার মানুষ যেমন পরিশ্রমী, তেমনি প্রতিবাদের এক অনন্য ঝান্ডা। মিরপুর উপজেলার তামাক যেমন প্রধান অর্থনৈতিক ফসল তেমনি ধান বা রবিশষ্যের উৎপাদন এতটাই ব্যাপক যে, শুধু মাত্র মিরপুর উপজেলার উৎপাদিত ফসল পুরো কুষ্টিয়া জেলার প্রয়োজনীয় খাদ্যাভাব পুরণ করে জেলার বাইরে সরবরাহ করা হয়।
এই মিরপুরে প্রায় পাকা রাস্তা সম্পন্ন। একটি প্রাচীনতম রেলওয়ে জংশন পোড়াদহসহ আরো দুটো স্টেশন হালসা ও উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মিরপুর রয়েছে। দু’বছর ধরে কোন এক অদৃশ্য কারণে বা জনপ্রতিনিধি নেতৃত্বের কোন্দল বা অপারগতা বা অবহেলায় মিরপুর রেলওয়ে স্টেশনটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
তারা মিরপুরের মানুষকে অবমূল্যায়ন করেছিলো। তাদের নম্রতা-ভদ্রতা-সৌজন্যতাকে দুর্বলতা ভেবেছিলো। কারণ তারা জানতোনা মিরপুরের মাটি শহীদ মারফত আলীকে যেমন জন্ম দিয়েছে. জন্ম দিয়েছে আফতার উদ্দিন-নজরুল করিমসহ শতমুক্তিকামী মানুষ যারা কীনা প্রানের মায়া তুচ্ছ করে চলার মতো, জীবন বাজী রাখা অসীম সাহসী মুক্তিযোদ্ধা।অসীম সাহসের ভান্ডার উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব কামারুল আরেফিন, তাদের ডাকে মিরপুরের আপামোর জনগণ তাঁতি, রাজনীতিক, লেখক, বুদ্ধিজীবি, ছাত্র-শিক্ষক, রিকশা-ভ্যানঅলা, জেলে, কামার, কুমার, ভবঘুরে, পাতাকুড়ানী, ব্রাম্মণ থেকে নমশুদ্র, নারী পুরুষ বৃদ্ধ যুবাসহ সকলে এক কাতারে এসে রাজপথ দাঁপিয়েছিলো। আর সেই দূর্লঙ্ঘনীয় প্রতিবাদী বজ্রমুষ্ঠি কখন যে একটি সঠিক পথের রেখা তৈরি করে দিয়ে গেলো সকলের অগোচরে সেটা আমাদের জনপ্রতিনিধিরা বুঝতে পারেন নি। যেমনটি তারা জনগনের বুকের ভাষা বুঝতে পারেনও না।
দাবী একটাই, রেলওয়ে স্টেশন পূণ:চালুসহ সকল আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজ এবং স্টেশনটিকে আধুনিকীকরণ করতে হবে।
কী ভাবছেন, এই দীর্ঘ সমন্বিত আন্দোলনের ফলাফল কী!
জনগনের তীব্র আকাঙ্খার কাছে পৃথিবীর কোনো ন্যায্য আন্দোলন কী বৃথা গেছে? না যায়নি! মিরপুর উপজেলাবাসী এক একটি আন্দোলনের বিষ্ফোরক। তারা দাবী পূরণ করেই ছেড়েছে। নেতাকে পেছনে ফেলে জনগণ যখন সামনে এগিয়ে আসে সেই আন্দোলন কখনো নিষ্ফল হয় না। এখানেও হয়নি।
প্রিয় মিরপুরবাসীর এমন ইস্পাত কঠিত দৃঢ় ঐক্য অটুট ও অলঙ্ঘনীয় হয়ে থাকুক। হয়তো একদিন আমাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রনের জন্য আমরা আমাদের নিজস্ব জনপ্রতিনিধি তৈরি করতে পারবো, যিনিই হবেন আমাদের আন্তরিক প্রানের প্রতিনিধি।
লেখকঃ হাসান টুটুল,
কলামিস্ট ও ব্যাংকার।